বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে বিভক্ত বিচারের প্রয়োজন নেই। দৈনন্দিন বিচারকার্য স্বল্প সময়ের জন্য হয়ে থাকে। শিশু অপরাধীকে ডকে না তুলে অভিন্ন বিচারে একই আদালতে আলাদাভাবে বসতে বা দাঁড়াতে দিলেই উদ্দেশ্য অর্জিত হতে পারে। প্রয়োজনে ক্যামেরা ট্রায়াল হতে পারে। শিশু আইনের ৭০ থেকে ৮৩ পর্যন্ত ১৪টি ধারায় উল্লিখিত প্রাপ্তবয়স্কদের দ্বারা শিশু-কিশোরদের বিরুদ্ধে কৃত অপরাধগুলো বিচার ও দণ্ড শিশু আইনের অধীন হবে। বিষয়টি বিসদৃশ। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ২০০০ কার্যকর থাকতে উল্লিখিত ১৪টি ধারায় অপরাধগুলো প্রয়োজনে সেখানে সন্নিবেশিত হতে পারত। আইনের ৩৩/৩৪ ধারামতে কিশোর অপরাধীকে মৃত্যুদণ্ড, যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং কারাদণ্ড প্রদান নিষিদ্ধ করা হয়েছে। কারাদণ্ডকে ‘কারাদণ্ড’ না বলে বলতে হবে ‘আটকাদেশ’। তবে অপরাধ মারাত্মক, গুরুতর, জঘন্য বিবেচিত হলে আটকাদেশ না দিয়ে কারাদণ্ড দেওয়া যাবে। ‘মারাত্মক’, ‘গুরুতর’, ‘জঘন্য’ ইত্যাদি নির্ধারণ করা হবে আদালতের জন্য বাড়তি জটিলতা।
আইনেই বলা যেতে পারত যে অপরাধের শাস্তি ১০, ১২ বা ১৪ বছরের অধিক কারাদণ্ড হলে তা ‘মারাত্মক’, ‘গুরুতর’, বা ‘জঘন্য’ অপরাধ গণ্য হবে। ১৭ বছর বয়সে খুন করে জামিনে থেকে ২৫ বছর বয়সে পুনর্বার খুন করলে দণ্ডবিধির ৭৫ ধারা কিংবা ফৌজদারি কার্যবিধি আইনের ৫৬৫ ধারা প্রযোজ্য হবে না; এবং ২৫ বছর বয়সে দণ্ডিত হয়ে অব্যবহিত পরেই যেকোনো পদে নির্বাচিত হতে কোনো আইনে অযোগ্য হবেন না। দণ্ডিত শিশুর অযোগ্যতা অপসারণ সম্পর্কিত ৪৩(খ) ধারার এমন সব অতি-উদার বিধান কাউন্টার-প্রোডাকটিভ হতে পারে। কিশোর-অপরাধের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি অতীব নমনীয় না হয়ে সার্বিক জননিরাপত্তার স্বার্থে বস্তুনিষ্ঠ হওয়া বাঞ্ছনীয়। শিশুর অনুপস্থিতিতে বিচার চলবে কি না, আইনে তা-ও স্পষ্ট করা হয়নি।
3 Responses
I also appriciate this